সুমন মাহমুদ শেখ, জেলা প্রতিনিধি, নেত্রকোনা-নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলায় চিরাং বাজারের আনিকা অটো রাইস মিলের মালিক ফোরকানুজ্জান শুকন ব্যবসায়ী পাওনাদারদের অর্থ আত্মসাৎ করে মিল বন্ধ করে পালিয়ে যাওয়ায় তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়।
গত রবিবার (১৬ ফেব্রুয়াি) স্থানীয় ধান ব্যবসায়ী ও পাওনাদার মো. কামাল উদ্দিন ও অন্যান্য পাওনাদারগণ
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও অগ্রণী ব্যাংক ম্যানেজার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।
জানা যায়, ফোরকানুজ্জান শুকন অগ্রণী ব্যাংক কেন্দুয়া শাখা থেকে প্রায় ৭৩/৭৪ লক্ষ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। ঋণের বিপরীতে আনিকা মিলটি ব্যাংকের কাছে মর্টগেজ রাখা হয়। কিন্তু ব্যাংকের কাছে দায়বদ্ধ থাকা সত্ত্বেও তিনি ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করেননি । এ ক্ষেত্রে অগ্রণী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আনিকা রাইস মিলটি নিলামে দেওয়ার জন্যে গত ১৭/২১ জানুয়ারি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করেন। অন্যদিকে এই ফোরকানুজ্জান শুকন ধান ব্যবসায়ীদের প্রাপ্য পাওনা প্রায় কোটি টাকাও পরিশোধ করেনি। পালিয়ে বেড়াচ্ছেন প্রায় কয়েক মাস যাবত।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয় যে, নগদে বাকীতে তারা ধান ক্রয় করতেন। আনিকা রাইস মিল থেকেও তারা ধান ক্রয় করেছিলেন। কিন্তু মিল মালিক একজন অর্থ আত্মসাৎকারী -এটা বুঝতে পারেননি তারা। এক পর্যায়ে
ক্ষতিগ্রস্ত ধান ব্যবসায়ীগণ অর্থ ফেরত পাওয়ার জন্য সামাজিক শালিস করেন। সামাজিক শালিসে প্রাপ্য টাকা দেওয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত অভিযুক্ত মিল মালিক পালিয়ে যায়। ফলে পাওনাদার ব্যবসায়ীরা চরম হতাশায় পড়েছেন। তাই তারা দাবি করেন, যদি মিলটি নিলামে তোলা হয় তাদের পাওনা টাকার বিষয়টি যেনো গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হয়। অন্যথায় তাদের অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে যাবে।
ব্যবসায়ীদের একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, “আমরা প্রতিনিয়ত ফোরকানুজ্জান শুকনের সাথে কাজ করতাম। তার উপর বিশ্বাস ছিলো, কিন্তু এখন এই পরিস্থিতিতে আমরা দিশেহারা। ব্যাংক যদি শুধু তাদের ঋণ আদায় করে আর আমাদের টাকা না দেয়, তবে আমাদের অবস্থা খুবই খারাপ হবে ।”
মিল মালিক ফোরকানুজ্জান শুকনের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও সংযোগ পাওয়া যায় নি । কেন্দুয়া, অগ্রণী ব্যাংক পিএলসি, হেড অব ব্রাঞ্চ ও এসিস্টেন্ট জেনারেল ম্যানেজার মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান বলেন, আমরা নিলাম কল করেছিলাম। কিন্তু এতে কেউ অংশগ্রহণ করেননি। এখন মামলা প্রক্রিয়াধীন। পাওনাদারদের টাকা আদায়ের ক্ষেত্রে ব্যাংকের করণীয় সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ক্ষেত্রে আমাদের কিছু করার সুযোগ নেই।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমদাদুল হক তালুকদার মুঠোফোনে জানান, অভিযোগ পেয়েছি । বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হবে। তিনি আরো বলেন, যথাযথ আইনী প্রক্রিয়ায় ব্যবস্থা নেয়া হবে।