1. sraban1982@gmail.com : পল্লী বার্তা ২৪ :
  2. info@www.pollybarta24.com : পল্লী বার্তা ২৪ :
রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:০৯ পূর্বাহ্ন

উল্টো রথের যাত্রী – সুমন মাহমুদ শেখ

সুমন মাহমুদ শেখ
  • প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৪ মার্চ, ২০২৫
  • ৩৯ বার পড়া হয়েছে

২৩ বছরের দুঃশাসন, শোষণ ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে ১৯৭১এ জেগে ওঠেছিল সমগ্র বাঙালি জাতি। সংঘটিত হয়েছিল রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ। ফলে আমরা একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ পেয়েছি। তবে স্বাধীনতা কতোটা পেয়েছি সেটা সবারই জানা। স্বাধীনতার পর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সম্মান ও কৃতজ্ঞতা জানানোর জন্যে তাদেরকে সরকারিভাবে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়েছে, হচ্ছে এবং হবেও। এটা স্বাভাবিক। কিন্তু সরকার যখন তারা ও তাদের প্রজন্মের জন্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কোটাপ্রথা চালু করলো তখন থেকে সেটা জনমনে নেতিবাচক মানসিকতা তৈরি হতে শুরু করে। সেই থেকে ধীরে ধীরে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি মানুষের ধ্যান ধারণা বদলে যেতে লাগলো। এ বিষয়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে কম বেশি সব সরকারের আমলেই বিভিন্ন কর্মসূচি ও টকশো হয়েছে। সভা সেমিনারের মাধ্যমে অনেক রাজনৈতিক নেতা, বুদ্ধিজীবি, সাংবাদিক ও মিডিয়া ব্যক্তিত্বগণ প্রতিবাদ করেছেন। তাতে কোনো ফল হয়নি। দীর্ঘদিনের পুঞ্জিভূত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছিল ২০১৮ সালের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে। তখন সরকারের টনক নড়েছিল বটে। পরে যেই লাউ সেই কদু। অতঃপর ২০২৪ সালে আবারও সেই ক্ষোভে সরকারের বিরুদ্ধে ফোঁসে ওঠে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। তারপর বাংলার চিরাচরিত অপরাজনীতি ও সরকারি অপসংস্কৃতির ভয়ানক দৃশ্যপট দেখলো সারাদেশ ও বিশ্ববাসি। আন্দোলনে সরকারের বাধা, পুলিশের বাড়াবাড়ি, মিছিলে গুলি, সেনাবাহিনী মোতায়েন এসব। এভাবে রাজপথ রক্তাক্ত হলো ছাত্র জনতার রক্তে। আন্দোলনে শহিদ হলো ছাত্র জনতা। পতন হলো সরকারের! সেই আন্দোলনের ফসল আজকের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। যাদের দায়িত্ব ছিল সংস্কারের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানসমূহের সকল অসঙ্গতি দূর করে রাষ্ট্রকে অপরাজনীতির কবল থেকে মুক্ত করা। চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ ও অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করা। অতঃপর একটি স্বাধীন ও শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠন করে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। কিন্তু আফসোস! সরকার হাঁটছে ভিন্ন পথে। এ যাবৎ সরকারের মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য কোনো রাষ্ট্রীয় সংস্কার দৃশ্যমান নয়, যাতে জনগণের কল্যাণ নিহীত রয়েছে। রাষ্ট্রের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করার তেমন কোন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। আসলে এসব হচ্ছে টা কি? এ সরকারও জুলাই বিপ্লবে শহিদ ও অংশগ্রহণকারীদের জন্যে কোটাপ্রথা চালু করার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। এটা একটা ভুল সিদ্ধান্ত। এ সিদ্ধান্ত থেকেই জুলাই বিপ্লবের প্রতি মানুষের নেতিবাচক চিন্তা ও মানসিকতার ভিত্তি স্থাপন শুরু হতে যাচ্ছে। তবে শহিদ ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সরকারি সহযোগিতা করা উচিৎ। তো এসব পরিবারের সদস্যদের মধ্যে যোগ্যতা ভিত্তিক সরকারি কোন চাকুরি দিয়ে, নগদ অর্থ দিয়েও সহযোগিতা করা যায়। কিন্তু কোটা কেন? যে কোটা বৈষম্যের বিরুদ্ধে সারা দেশের ছাত্র জনতা রক্তক্ষয়ী আন্দোলন সংগ্রাম করে, তরতাজা তরুণ প্রাণের বিনিময়ে এসব বিলুপ্ত করেছে, সেই কোটা প্রথা পূণর্বহালের অপচেষ্টা করা হচ্ছে কেন? এটা তো শহিদ আবু সাঈদ ও মুগ্ধূদের রক্তের সাথে বেঈমানী করা হচ্ছে। সুতরাং সাধু সাবধান! লেখক : সুমন মাহমুদ শেখ কবি ও প্রাবন্ধিক।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট